নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দিনে দুপুরে নগরীর কাটপট্টি এলাকায় জুয়েলারি দোকান থেকে ৬৩ লক্ষাধিক টাকার র্স্বণালংকার চুরির ঘটনায় সংঘবদ্ধ চোর চক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু পরিমান চোরাই স্বর্ণালংকার। দুঃসাহসিক এ চুরির ঘটনার প্রায় ৯ মাসের মাথায় কোতয়ালী মডেল থানার চৌকস পুলিশ অফিসার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রাসেল এর নেতৃত্বে বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজনের নাম সুমন হাওলাদার। তিনি সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর এলাকার হাওলাদার বাড়ির ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। সে ওই চুরির ঘটনার মূল মাষ্টার মাইন্ড বলে জানাগেছে। তবে গ্রেফতারকৃত বাকিদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। রবিবার বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী) মো. রাসেল। তিনি জানিয়েছেন, ‘যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চক্রের সদস্য মোট ৯ জন। যারা ভিন্ন ভিন্ন জেলায় থাকেন। যে কারণে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাদের কাছে পৌঁছানো এবং গ্রেফতারে সময় লেগেছে গেছে। তার মধ্যে করোনা পরিস্থিতির কারণে আরও বেগ পেতে হয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ এবং চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চক্রের নয়জন সদস্য’র মধ্যে থেকে ৮ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। যাদের মধ্যে দু’জন রয়েছে, যারা চোরাই স্বর্ণালংকারের ব্যবসা করে থাকেন। তাদের কাছ থেকে কিছু পরিমান স্বর্ণালংকারও উদ্ধার হয়েছে। এসকল বিষয়ে কমিশনার স্যার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারতি তথ্য জানাবেন বলে জানান এসি রাসেল।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মার্চ দুপুর সোয়া ২টার দিকে কোতয়ালী মডেল থানার অদূরে কাটপট্টি রোড ‘আশ্রাফ এন্ড সন্স জুয়েলার্স’ নামক স্বর্ণের দোকানে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়। এসময় চোর চক্র ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৬৩ লক্ষ টাকা মূল্যের ১২৬ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে চম্পট দেয় চক্রের সদস্যরা। ওই ঘটনায় জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের মালিক বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের নবগ্রাম রোডের আশ্রাফ আলী তালুকদারের ছেলে মো. বাচ্চু তালুকদার বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাত নামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৭০/২০।
কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ‘চুরির ঘটনার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন রাজার চরের সুমন হাওলাদার। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি চট্টগ্রামে। সেখানে বসেই সংঘবদ্ধ হয় চক্রটি। আর চুরির পরিকল্পনা হয় ঢাকায় বসে। বরিশালে চুরি করে তারা আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেফতারের পরে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চুরির ঘটনা এবং রহস্য বেরিয়ে আসে। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে গ্রেফতার করা হয়েছে চক্রের আট সদস্যকে। তবে গ্রেফতার ৮ জন হলেও ৬ জন সরাসরি চুরির সঙ্গে জড়িত। বাকি ২ জন চোরাই স্বর্ণালংকার কেনা বেচার সাথে জড়িত। এদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম জুয়েলারি মালিক সমিতির নেতৃত্ব পর্যায়ে রয়েছেন। চক্রের একজন সদস্য এখনো পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
Leave a Reply